সৌদি যাচ্ছেন বাইডেন, বৈঠক হবে যুবরাজ সালমানের সঙ্গেও

চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সফরের প্রথম দিনে গত বুধবার ইসরায়েল পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে শুক্রবার (১৫ জুলাই) সৌদি আরবে যাচ্ছেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গেও বৈঠক করবেন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের ডি-ফ্যাক্টো শাসক, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে তার বিতর্কিত শীর্ষ বৈঠকে অংশ নিতে শুক্রবার দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অবশ্য যুবরাজের পাশাপাশি তার বাবা বাদশাহ সালমানের সাথেও সাক্ষাৎ করবেন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট।

অবশ্য দুই বছর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট এবং সৌদি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সৌদি আরবকে ‘পারিয়াহ’ বা অস্পৃশ্য রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন।

যদিও সৌদি যুবরাজ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা বলছেন, জামাল খাশোগিকে হত্যার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
বিবিসি বলছে, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এই নেতৃবৃন্দের আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে জ্বালানি সরবরাহ, মানবাধিকার এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার মতো ইস্যুগুলো রয়েছে।

সৌদি আরব হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে তেলের দাম বৃদ্ধির পর ওয়াশিংটন এই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করছে বলে শোনা যাচ্ছে।

আর তাই বাইডেনের এই সফরে দেশটিকে তেলের উৎপাদন বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি কর্মকর্তাদের প্রতিশ্রুতি আদায় করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন খাশোগি। নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।

সৌদি কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিলেন, খাশোগি সৌদি কনস্যুলেট ভবন ছেড়ে গেছেন, কিন্তু জনসাধারণের চাপের কারণে পরে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে দেশটি। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের একটি তদন্তে বলা হয়, খাশোগির হত্যা একটি ‘পূর্বপরিকল্পিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’।

তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বাস্তবতায় সৌদি আরবকে ‘পারিয়াহ’ বা অস্পৃশ্য রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে দেশটির সঙ্গে, তথা মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতেই এখন বেশি মনোযোগী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।